রব প্লাথ -নিউইয়র্কের বাসিন্দা ৪৬ বছরের এই
কবি অ্যালেন গিন্সবার্গের প্রাক্তন ছাত্র। বিগত পঁচিশ বছর ধরে কবিতা লিখছেন।
বুকোস্কি পরবর্তী সময়ের আমেরিকান আন্ডারগ্রাউন্ড কবিতার প্রাণপুরুষ রব প্লাথ।
প্রাতিষ্ঠানিকতাকে অগ্রাহ্য করে অসংখ্য ছোট প্রেস থেকে তার শতাধিক কবিতা প্রকাশিত
হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বই- 'আ বেলিফুল অফ অ্যানার্কি', 'ডেথ ইজ ডেড', 'ডেথবেড কালারড গ্লাসেস', 'ইন রট উই ট্রাস্ট'।
রব প্লাথের কবিতার অনুবাদ
যদি অক্ষর থেকে রক্ত না গড়ায়
যদি
কবিতা
মাত্রাতিরিক্ত আবেগ
অথবা উন্মাদনার
কাছাকাছি না পৌছয়
যদি
অক্ষরগুলোকে
নিঙড়োলে
রক্ত না গড়ায়
যদি
পাতার উপরে
বিষবমির দাগ
না থাকে
যদি
শরীর
আর
কবিতার মধ্যে
অনেকটা দুরত্ব থাকে
তাহলে কবিতাটা
আদৌ
কবিতা নয়
তাহলে
সেই কবিতার সাথে
ক্রসওয়ার্ড পাজলের
যন্ত্রের ম্যানুয়ালের
রেস্তোরাঁর মেনুর
টিভি গাইডের
ফোন বুকের
কোনো পার্থক্য নেই
জ্বালাধরানো রক্তাক্ত উল্কির কবিতা
গাঁড় মারাক
কালি
এবং
কলম
এবং
কাগজ
টাইপরাইটার
এবং
ল্যাপটপ
এবং
আরো যা যা কিছু...
ভেঙে ফ্যালো
জমাট নুনের
তৈরী
ধারালো
বিশাল
ছুরি দিয়ে
কবিতা
লেখো
বাক্যগুলোকে
পাঠকের
মাংসে
সটান
খোদাই করো-
জ্বালাধরানো
রক্তাক্ত
উল্কির
কবিতা
কারণ
শেষপর্যন্ত
পাঠক
মানুষ নয়
প্রথানুসরণজনিত অন্ধত্ব
প্রথম যেদিন হাঁটতে শিখেছি
যেখানেই গেছি
পৃথিবী আমার দুচোখের উপর
একটার পর একটা
চশমা বসিয়ে দিয়েছে
আর সেইসব অস্বচ্ছ স্তর
আমার দৃষ্টিশক্তি
ক্রমে আবছা থেকে আবছাতর
করে তুলেছেঃ
বাবা মায়ের লেন্স
পাবলিক স্কুলের লেন্স
পপ সংস্কৃতির লেন্স
ফ্যাশনের লেন্স
প্রেসিডেন্টের লেন্স
ভ্যাটিকানের লেন্স
পরজন্মের লেন্স
ইউনিভার্সিটির লেন্স
সর্বশক্তিমান ডলারের লেন্স
প্রভৃতি...
তারপর একদিন
আমি একটার পর একটা চশমা
খুলে ফেলে
নদর্মায় ছুঁড়ে ফ্যালা শুরু করলাম
প্রথমে ভেবেছিলাম
আমি অন্ধ হয়ে যাচ্ছি
এখানে ওখানে ধাক্কা খাচ্ছিলাম
রক্তাক্ত হচ্ছিলাম
ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছিলাম
শত্রু তৈরী হচ্ছিলো
বন্ধুদের হারাচ্ছিলাম
কতৃপক্ষ আমায় অপছন্দ করছিলেন
অসংখ্য ক্ষত তৈরী হয়েছিল
পুরোপুরি একঘরে হয়েছিলাম
তারপর একদিন
শেষ চশমাটা খুলে ফ্যালার পর
আমি হাঁটতে হাঁটতে
একটা গর্তে পড়ে গেলাম
কিন্তু তারপর আমি উপরে তাকালাম
সেই কবরের মত গভীর গর্তের উদর থেকে
আমি পৃথিবীকে লক্ষ্য করলাম
আর সবকিছু উজ্জ্বল হয়ে উঠলো
আর আমি উপলব্ধি করলাম
পৃথিবী আমার থেকে
কী লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিল-
আমিই আমার ঈশ্বর
বধির ও ভ্রমাত্মক কিছু কুকুর
যদি
ঈশ্বর
স্বর্গের ধু ধু প্রান্তরে
হঠাৎই পড়ে যান
আর কোনো মানুষই
সেই শব্দ
শুনতে না পায়
তাহলে
আমাদের প্রার্থনাগুলো
যখন ঈশ্বরের মৃতদেহে
ধাক্কা খেয়ে
ঝড়ে পড়বে
তখন কি
কোনো শব্দ হবে?
তরুণ কবিদের নিপীড়নের উপায়
সেইসব তরুণ কবিদের
আমরা কিভাবে নিপীড়ন করবো
যারা বারো ক্লাসের
বিজ্ঞান পরীক্ষার মত
সযত্নে তাদের কবিতাগুলো
নির্মাণ করে?
যাদের শিখাগুলো
মাত্র কয়েক সপ্তাহ
কারো সাথে প্রেম করে
ও সে প্রেম ভাঙার পরই
জ্বলে ওঠে?
কোন যন্ত্রণাদায়ক প্রণালীতে
আমরা তাদের
সেইসব নরম ও ছোট্ট শরীরগুলোকে
বিক্ষেপ করবো
যাতে তারা
পিরিয়ডিক টেবিল,
আর তার যত সূত্র,
আর সেইসব অদ্ভুত বস্তু
যা তারা কোনোদিন স্পর্শ করেনি,
আমূল বিস্মৃত হবে?
হয়ত দেশলাই বাক্সের ধারালো কোণ
তাদের চোখের উপর বুলিয়ে
আড়াআড়িভাবে তাদের দৃষ্টিশক্তি
কর্ষণ করা উচিত।
হয়তো তাদের নির্লোম হাতের উপর
কয়েকটা জ্বলন্ত সিগারেট নিভিয়ে ফ্যালা উচিত।
যাতে তারা ব্রেইল অক্ষরের মত
সেইসব ফোসকাগুলোকে স্পর্শ করতে পারে
আর ভুলেও দ্বিতীয়বার
টাইপরাইটারের দিকে
আঙুল না বাড়ায়।
এ সংখ্যায় সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ লেখাগুলো। ধন্যবাদ আপনাকে। - তুহিন দাস
ReplyDeleteসুন্দর
ReplyDeleteKhub sundor
ReplyDeletebhalo bhalo ... besh bhalo
ReplyDelete