এমিলি ডিকিনসনের কবিতা : অনুবাদ
সোনালী চক্রবর্তী
এমিলি এলিজাবেথ ডিকিনসন ঊনবিংশ শতাব্দীর
আমেরিকায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি। তাঁর জন্ম ১৮৩০ খৃস্টাব্দে, ম্যাসাচুসেটসে। জীবনের অধিকাংশ সময়টাই
তিনি কাটিয়েছেন ব্যক্তিগত নির্জনতায়, একাকী। তাঁর পরিবারের কেউও জানতেন না তার
সৃষ্টি সত্বার অস্তিত্ব। তাঁর জীবদ্দশায় মাত্র এক ডজনেরও কিছু কম কবিতা প্রকাশিত
হয়েছে, যেখানে মৃত্যুর পর অদ্যাবধি তাঁর প্রকাশিত কবিতার সংখ্যা ১৮০০-র অধিক। এমিলির কবিতা তাঁর
সমসাময়িকতার প্রেক্ষিতে আলোকবর্ষ দূরত্বের স্তরে আধুনিক। শিরোনামহীনতা, যতিচিহ্নদের অনুপস্থিতি, তীক্ষ্ণ পঙক্তির গঠন তাঁর
কবিতাকে ব্যতিক্রমী করে তুলেছে প্রকৃত অর্থেই। তাঁর মৃত্যু হয় ১৮৮৬ সালে মাত্র ৫৫ বছর
বয়সে।
**
মস্তিষ্কের ভিতর টের পাই এক অন্ত্যেষ্টিকে,
আর শোকার্তরা ঘুরে বেড়ায় এপার থেকে ওপার,
তারা হাঁটতে থাকে সদর্পে, হাঁটে আর হাঁটে
যতক্ষণ না মনে হয়
আমার বোধের আগল ভেঙে পড়েছে...
যখন তারা সবাই নিজেদের আসন গ্রহণ করে,
ঢাকের মতো কিছু যেন বাজতে শুরু করে তাদের
পরিচর্যায়,
বাজতে থাকে, বাজতেই থাকে
যতক্ষণ না বুঝি
আমার চিন্তাশক্তি নিস্তেজ হয়ে পড়েছে...
তারপর শুনতে পাই তাদের একটা বাক্স তুলে
নেওয়ার শব্দ,
যা কড়কড় শব্দে ভাঙা হয় আমার আত্মাকে এফোঁড়
ওফোঁড় করে,
শাসনের সেই একই জুতো দিয়ে।
ফের শূন্যতা টহল দিতে শুরু করে...
মনে হয় সব স্বর্গগুলো একটা মাত্র ঘণ্টা,
আর সমস্ত জীবিতরা শুধু দ্বিতীয় ইন্দ্রিয়,
সেখানে আমি আর নৈঃশব্দ্য,
অদ্ভুত কোনও প্রজাতি, ধ্বংসপ্রাপ্ত, একাকী ...
এরপর ভেঙে যায় সকল যুক্তির পাটাতন,
আমি তলিয়ে যেতে থাকি ক্রমশ, ক্রমশই...
প্রতি ডুবে ধাক্কা খাই একেক পৃথিবীর চরায়,
আর ফুরিয়ে যেতে থাকে সমস্ত জানা।
No comments:
Post a Comment