।। বাক্‌ ১২৪ ।। মিতা চার্বাক ।।





মিতা চার্বাকের দুটি কবিতা   


ইকুইলিব্রিয়াম

বিকলাঙ্গ প্রজাপতির ডানায়
ভাঙ্গা কাঁচের সম্ভার
সম্ভবত, এটি নৈরাশ্যের সমাপ্তি নয়
অন্য কিছু হবে,
আর যাই হোক নদী নয়

এখানে দিন ও রাত পাশাপাশি
একটির পর আর একটি হয় শুন্য,
এখানে একমুঠো অন্নের জন্য
জিহ্বা তোমাকে উত্তেজিত করবে,
পেটে ক্ষুধা, পিটে ক্ষুধা
সারা শরীরে জলপিপাসা
এবং এখানে জীবন ও মৃত্যু পাশাপাশি,
একটির পর অপরটি শূন্য হয়,
কখনও কখনও দুটোই শূন্য
সরল রেখায় সব
যদিও সরলতা খাটেনা
তথাপি এটা হছে জীবন,
জীবনের অভিপ্রায় মৃত্যু,
মৃত্যু হচ্ছে- ঘাসের খাদ্য হয়ে যাওয়া ।।







মঙ্গা

আজ বরং উঠি
এ বেলা দিনাজপুর;
এই বলে লোকটা বসে রইল
লাঙ্গলের পাঁজরে,
ঘানির শব্দে,
আলের নিচে উইঢিবির ভেতর,
বসেই রইল ঘোরতর শূন্যতায়


সমস্ত রাত্রি চাপা নিঃশ্বাসে ধুঁকে ধুঁকে উবে যায় ভোর অবধি;
ঘূর্নিবালুর কাঁপনে ধানের পাতান আছড়ে পড়ে
উপোসি দিন, বন্ধ্যা সময় সঙ্গিন
ইতোমধ্যে কপালের ঘামে জমা হয়েছে নুনের অনুবাদ
বিষাদ ভরা শরীর,
শিরদাঁড়া খাঁমচে ধরেছে যেন কেউ;
দুপুরের তাবৎ রোদ যখন মাথা কুটে মরে
নৈঃশব্দে দাঁড়িযে থাকা সুপারি বনে
তখনও নিরুত্তাপ বসে থাকা. . .

এ বিয়ানো আবাদ হৈমন্তিক
তবু অবিশ্বাসী হল- জল, মাটি আর রৌদ্ররা
এবারের সারা ভাদোর দখলে নিয়েছে গেরুয়া রোদ
এবারের ব্রহ্মপুত্র বর দিয়েছিল
তবুও দামুরহুদী গাঙ্গে জোয়ার নামে নাই,
 তবুও উঠোনে পিঠাপুলির দিন উঁকি দেয় নাই

রসুইঘরে, মাচাঙ্গে বিড়ালের আনাগোনা
জিয়ল মাছের কাঁটা বহুকাল তার পাকস্থলী ছোঁয়নি ৷
গৌড়ভূমের লালমাটির অবসাদ হাঁড়ি বেয়ে চুইয়ে পড়ে
ঘুরে ঘুরে উজান পথে, আলরাস্তায় ছায়াহীন কেউ কেউ

দূরে রোগাটে গাইগরু
দুধভাত দেশান্তর  ।।


1 comment: